https://voiceofpeople24.com/

3810

sports

প্রবাসে থাকা বাঙ্গালির পরিচ্ছদ-আকাঙ্ক্ষা পূরণে বদ্ধপরিকর তিন নারী

প্রকাশিত : ০৮ এপ্রিল ২০২৩ ০৪:১৪ | আপডেট : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০২:১৬

 আসন্ন ঈদকে ঘিরে প্রবাসে বসবাসরত নারী-পুরুষ, যারা নিজেদেরকে সাজাতে চান তাদের জন্যে রয়েছে “সিন্ডারেলা’স ড্রিম ক্লোজেট”-“এন জে বুটিক”-“সামিনাজ কালেকশন” নামক অনলাইন ব্যবসার জমজমাট আয়োজন। আর এ নিয়েই কথা বলেছেন তিন অনলাইন ব্যবসায়ী আইরিন রহমান, নুসরাত জাহান এলিন এবং সামিনা নাজ। গত ৬ এপ্রিল বৃহস্পতিবার প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার জনপ্রিয় সম্প্রচার “টক অফ দ্যা উইক” অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এই তিন নারী। ঈদের বিশেষ কালেকশন ও নিজ নিজ ব্যবসা সম্পর্কে দর্শকদের উদ্দেশ্যে কথা বলেছেন তারা।   তথ্য প্রযুক্তির যুগে আমাদের জীবন যেমন হয়েছে সহজ তেমনি কেটেছে প্রচুর বাধা। ইন্টারনেট আজ পুরো পৃথিবীকে হাতের মুঠোয় নিয়ে এসেছে। বিনোদন ছাড়াও ইন্টারনেট এখন অনেকের জন্য আয়ের প্রধান উৎস। ঘরে বসেই শুরু করা যাচ্ছে ব্যবসা যার কাস্টোমার হতে পারে পৃথিবীর যেকোন প্রান্তের যেকোন মানুষ। অনলাইনে ব্যবসা শুরু করা খুব কঠিন কিছু নয়, আবার একেবারে সহজ কাজও নয়। এই অনলাইন ব্যবসায় পিছিয়ে নেই উত্তর আমেরিকার নারীরা। কর্মজীবী এই নারীরা কাজের পাশাপাশি নিজের ক্রিয়েটিভিটির মাধ্যমে গড়ে তুলেছেন এই ব্যবসাগুলো। যা অনেক প্রবাসী বাঙ্গালিদের প্রয়োজনকে বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছে। আইরিন রহমান, পেশাগত জীবনে আমেরিকার স্বনামধন্য ব্যাংকে ওমেনস বিজনেস এডভোকেট হিসেবে কর্মরত  আছেন। পাশাপাশি নারী উদ্যোক্তা হিসেবেও অল্প বিস্তর কাজ করে যাচ্ছেন। নিউইয়র্কের একটি ইউনিভাসিটি থেকে জুয়েলারি ডিজাইনার কোর্স সম্পন্ন করেছেন তিনি, নিজের ডিজাইন করা জুয়েলারি নিয়ে এক বছর যাবত অনলাইন ভিত্তিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান 'সিন্ডারেলাস ড্রিম ক্লোজেট' গড়ে তুলেছেন। দেশে থাকতেই একটি বুটিক শপের সাথে ডিজাইনার হিসাবে জড়িত ছিলেন আইরিন রহমান। করোনাকালীন মহামারীর সময়ে নিউইয়র্কে তিনি নিজ ব্যবসা শুরুর সিদ্ধান্ত নেন। মূলত হাতে বানানো গহনা গুলোই আইরিন রহমানের  'সিন্ডারেলাস ড্রিম ক্লোজেট'র মূল আকর্ষণ। এছাড়াও তিনি দেশীয় ঐতিহ্যকে মাথায় রেখে তুরস্ক ও দুবাই থেকে দেশীয় ধাঁচের গহনা বানিয়ে আনেন। আইরিন রহমান বলেন,  “এবারের ঈদে তার নিয়মিত ক্রেতাদের জন্যে রয়েছে বিশেষ আয়োজন, যা ইতোমধ্যে গত সপ্তাহে হিল্টন হোটেলের মেলায় প্রদর্শিত হয়েছে। সেখানে অক্সিডাইজড, গোল্ডপ্লেটেড, টার্কিশ স্টোন জুয়েলারি রয়েছে।“ অনুষ্ঠানে দর্শকদের উদ্দেশ্যে আইরিন রহমান নিজ ডিজাইন করা কিছু গহনাও প্রদর্শন করেন। সামিনা নাজ একজন ফার্মাসি টেকনিশিয়ান। ১৯৯৮ সাল থেকে নিজ ব্যবসা “সামিনাজ কালেকশন” নামে শুরু করেছেন কানাডার এডমন্টন, আলবার্টাতে। সামিনা নাজ জানান, নিজ উদ্যোগেই হাতে বানানো ক্র্যাফটসের মাধ্যমে দেশীয় কালচার ও ট্যাডিশন কে তুলে ধরেন তিনি বিদেশের মাটিতে। বাংলাদেশি ছাড়াও অন্যান্য দেশী মানুষের মধ্যে বিপুল ভাবে সাড়া ফেলেছে সামিনা নাজের শাড়ী, গহনা, বাচ্চা এবং পুরুষদের পোষাক। ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে সম্পর্ক কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ জানতে চাওয়া হলে সামিনা নাজ বলেন, “ব্যবসায় আমার মূল বিষয়বস্তু হচ্ছে একজন ক্রেতা। তাদের চাহিদা ও আত্মতৃপ্তির উপরে আমি আলোকপাত করে থাকি। ক্রেতার সাথে একটি স্বচ্ছ ও বিশ্বস্ততার সম্পর্ক বজায় রাখা খুব জরুরি।“ এবারের ঈদে রয়েছে সামিনা নাজের প্রচুর কালেকশন। আছে মেয়েদের জামদানী, মসলিন শাড়ি-সালোয়ার কামিজ-দেশী গহনা, বাচ্চাদের ড্রেস, পুরুষদের কুর্তা-পাঞ্জাবি, আরো আছে পর্দাশীল মেয়েদের হিজাব-আবায়া। শুধু বাঙ্গালিই নয়, সামিনা নাজ তার অনলাইন ব্যবসায় অবাঙালিদের নজর কাড়তেও সক্ষম হয়েছেন। নুসরাত জাহান এলিন 'লং আইল্যান্ড হিকসভিল মিডল' স্কুলে সহকারী শিক্ষক হিসাবে কর্মরত আছেন। মূলত তিনি একজন ফ্যাশন ডিজাইনার হিসাবেই দীর্ঘ ২৫ বছর যাবত কাজ করছেন। তার অনলাইন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম-এন.জে বুটিক।  "বুটিক বন্ধু মেলা “ নামে সংগঠনের বিজনেস অর্গানাইজার তিনি। নুসরাত এলিন জানান, “ছোটবেলা থেকেই আর্টিস্ট হবার স্বপ্ন ছিল তার, নিজেই নিজের পোশাক ডিজাইন করতেন। “এক পিস-এক ডিজাইন” স্লোগানের মাধ্যমে প্রায় বিশ বছর আগে থেকে ঘরে বসেই বুটিকের কাজ শুরু করেন। দেশী এবং আমেরিকান কাপড় নিয়ে ফিউশন করতে ভালোবাসেন নুসরাত এলিন। ডিজাইনার শাড়ি এবং কালেকশন শাড়ির বা ড্রেসের মাঝে পার্থক্য সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “দুটোর মধ্যে অবশ্যই হাতে ডিজাইনের শাড়ির মূল্য বেশি, কারণ সেখানে প্রচুর সময় ও শ্রম ব্য়য় হয়।“ আমেরিকায় স্কুলে শিক্ষকতার সময়ও নুসরাত এলিন নিজের শিল্পকে ছবি আঁকা ও হ্যান্ড ক্রাফটসের মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছেন শিশুদের মাঝে। এ নিয়ে মিডল স্কুলের বাচ্চাদের মাঝে নুসরাত এলিনের রয়েছে ব্যাপক পরিচিতি।

১৫ এপ্রিল জ্যামাইকার পানসী নামক রেস্টুরেন্টে “বুটিক বন্ধু মেলা”র প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে, সেখানে সবাইকে নিমন্ত্রণ জানিয়ে অনুষ্ঠানটি শেষ হয়। অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনায় ছিলেন সোহানা নাজনীন, এবং কারিগরি সহায়তায় ছিলেন এইচ বি রিতা। প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার এই সপ্রচারটি প্রতি বৃহস্পতিবার রাত নয়টায় অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।