https://voiceofpeople24.com/
3796
international
প্রকাশিত : ০৫ এপ্রিল ২০২৩ ১১:৪৮ | আপডেট : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০০:১০
বাংলাদেশী হাফেজে কোরআন কামরুল আলম। হৃদয় শীতল করা সুললিত কণ্ঠের কুরআন তিলাওয়াত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করতেন নিয়মিত। ফেসবুকে শেয়ার করা সে তিলাওয়াতের মাধুর্যে বিমোহিত হয় মালদ্বীপের সরকারী একটি মসসিজদ কমিটির নেতৃবৃন্দ। বাংলাদেশি হাফেজ কামরুল আলমকে খুঁজে বের করতে তারা সাহায্য নেন প্রবাসী বাংলাদেশীদের। মসজিদ কমিটির ইচ্ছা এ সুমধুর কণ্ঠের অধিকারী কামরুল আলমই এবছর মসজিদটিতে তরাবির নামাজ পাড়াচ্ছেন।
মসজিদ কমিটিকে পাসপোর্ট, ব্যক্তিগত সনদপত্র ও প্রয়োজনীয় কাজগপত্র জমা দেয়ার পর স্পেশাল ভিসাসহ বিমানের টিকেট পাঠানো হয় তার জন্য। দেশটিতে পৌঁছে প্রথম রমাজনে অতিথি ইমাম হিসেবে কামরুল তারাবি পড়ান হুলুমালে অবস্থিত মসজিদ আল শেখ কাসিম বিন আল-থানিতে। সেখানে একসাথে এক হাজার ৫০০ জনেরও বেশি মুসল্লী নামাজ পড়তে পারেন। এখন দেশটির ফুবামুলাহের মসজিদ আল ইনারায় সুললিত কণ্ঠে তারাবির নামাজ পড়িয়ে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছেন বাংলাদেশি হাফেজ কামরুল আলম।
হাফেজ কামরুল আলম সিলেট জেলার বালাগঞ্জের মাহবুবুর রহমান ও সাহেদা বেগম দম্পতির দ্বিতীয় সন্তান। প্রাথমিক শিক্ষাটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শেষ করে ভর্তি হন মাদ্রাসায়। জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেটের (জেডিসি) পরীক্ষার পর নিজ ইচ্ছায় দুই বছরের মাথায় হিফজুল কোরআন শেষ করেন তিনি। বর্তমানে আলিম দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যায়নরত আছেন এ হাফেজ।
মালদ্বীপে তারাবির নামাজ পড়ানোর আমন্ত্রণ পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে হাফেজ কামরুল বলেন, ‘গত বছর চট্টগ্রামের জেলা মডেল মসজিদে তারাবি নামাজের ইমামতি করার সময়কার কোরআন তেলাওয়াতের ভিডিও ইউটিউবে মালদ্বীপের একটি সরকারি মসজিদ কমিটি দেখতে পান। পরে তারা খোঁজ নিয়ে আমি বাংলাদেশি জানতে পারলে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মাধ্যমে আমার সাথে যোগাযোগ করেন। তাদের মসজিদে রমজানের তারাবি নামাজের জন্য আমন্ত্রণ জানান।
তিনি আরো বলেন, ‘শুরুতে হিরিলান্দো আইল্যান্ডের মসজিদ আল লুবাবীতে নামাজ পড়ানোর কথা ছিল। পরবর্তী ফুভাহমুলা সিটির সাবেক সাংসদ আমন্ত্রণ করে, মিনিস্ট্রি থেকে কথা বলে ট্রান্সফার করে নেন মাসজিদ আল ইনারায়, যেটি ফুভাহমুলা সিটিতে। বর্তমানে এ মসজিদেই ২০ রাকাত তারাবির পাশাপাশি আট রাকাত কিয়ামুল লাইলের নামাজ পড়াচ্ছি।’
কামরুল বলেন, মালদ্বীপে অবস্থানরত বাংলাদেশি ও সেখানকার স্থানীয়দের আন্তরিকতা ও ভালবাসা পেয়ে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছি।
শুধু আমি সেখানে তারাবি পড়াচ্ছি বলে অনেকের এবছর রমজানে দেশে যাওয়ার ইচ্ছা থাকা স্বত্বেও দেশে যাননি। তারা নিয়মিত আমার পেছনে তারাবির নামাজ পড়ছেন। অনেক প্রবাসী বাংলাদেশিরা আমাকে মক্কার মসজিদুল হারামের ইমাম শায়খ আবদুর রহমান আল-সুদাইসের সুরে তেলাওয়াতের কারণে সুদাইস বলে ডাকেন। এতে নিজেকে গর্বিত মনে হয়। আমি কোরআন খতমের শুরু থেকেই তাকে খুব বেশি অনুসরণ করতাম। তার তেলাওয়াতের ধরন, সুর ও কণ্ঠ আয়ত্তে আনার চেষ্টা করতাম।
এ দিকে, কামরুল আলমের কোরআন তেলাওয়াতের সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে সুদুর যুক্তরাষ্ট্রেও। সেখানকার প্রবাসীদের মধ্যেও কামরুল সম্পর্কে আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে।
কামরুল আলমের সুললিত কণ্ঠে কোরআন তেলাওয়াত সম্পর্কে জানতে পেরে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী নিউইয়র্কের বাসিন্দা রেবেকা সুলতানা নীতা বলেন, ‘কামরুলকে আমার নিজের সন্তানের মত মনে হয়। তার সুমধুর কণ্ঠে কোরআন তেলাওয়াত শুনে আমিও অভিভূত হয়েছি। আমরা চাই, আমেরিকাতেও আমরা কামরুলের কণ্ঠে কোরআন তেলাওয়াত শুনব। তার কোরআন তেলাওয়াতের সুনাম একদিন পুরো পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়বে।